প্যানক্রিয়াটাইটিস হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার ফলাফল কখন কেমন?

প্যানক্রিয়াটাইটিস একিউট এবং ক্রনিক অবস্থায় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার ফলাফল কখন কেমন হয়ে থাকে এ সম্পর্কে থাকছে আজকের আলোচনায়। ইতিপূর্বে অগ্নাশয়ের প্রদাহে আক্রান্ত বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষের চিকিৎসা দিয়েছি যাদের কেউ কেউ একিউট কন্ডিশনেই আমার কাছে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। আমার অভিজ্ঞতা থেকে যা দেখলাম মেডিসিন প্রয়োগের ১ সপ্তাহের মধ্যেই পেটের ব্যথার মতো জটিল উপসর্গটি দূর হয়ে যায় এবং টানা ৮/৯ মাস ঔষধ প্রয়োগ করার পর তাদের কাউকেই আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি আল্হামদুলিল্লাহ।

বলতেই হয়, এমন সৌভাগ্য হয়তো সবার হয় না। কারণ একিউট কন্ডিশনে হাতে গোনা কিছু সংখ্যক পেশেন্ট আমাদের মতো হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদের অধিকাংশই নেহায়েৎ গরিব শ্রেনীর মানুষ এই যেমনঃ ট্রাক ড্রাইভার, গরিব গৃহবধূ, মাদ্রসার শিক্ষক। হয়তো আল্লাহ পাক এই গরীপনা দিয়েই এই ক্ষেত্রে তাদের সৌভাগ্যবান করেছেন।

টাকা পয়সা থাকলে হয়তো দেশ বিদেশের নামী ডাক্তারদের পেছনে বছর বছর ধরে ঘুরে বেড়াতেন অযথাই। কারণ এই রোগের ভালো কোন এলোপ্যাথিক ম্যানেজমেন্ট নেই – জেনে রাখুন। এভাবে বছর বছর ধরে পুষে পুষে রোগের ক্রনিক অবস্থায় আরো জটিল জটিল সম্পর্কযুক্ত সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে এই যেমনঃ সংক্রমণ, ডায়াবেটিস, সিউডোসিস্টের গঠন, কিডনি বিকল হওয়া, শ্বাসকষ্ট, অগ্ন্যাশয় পাথর বা প্যানক্রিয়াটিক স্টোন, প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সার ইত্যাদি।

চিকিৎসা নিতে নিতে বহু বছর পর (৫ বছর বা ১৫ বছর পর) এক সময় হোমিওপ্যাথির কথা মনে পড়ে। শেষ চিকিৎসা হিসেবে কোন এক হোমিও চিকিৎসকের কাছে যায় চিকিৎসা নিতে। ততদিনে রোগের কি জটিল অবস্থা দাঁড়ায় একবার ভেবে দেখুন। দীর্ঘ দিনের পুরাতন রোগ এবং এর সাথে সম্পর্কযুক্ত নানা  জটিল সমস্যা এই যেমনঃ সংক্রমণ, ডায়াবেটিস, সিউডোসিস্টের গঠন, কিডনির  সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, অগ্ন্যাশয় পাথর বা প্যানক্রিয়াটিক স্টোন ইত্যাদি যখন প্রকাশ পায় তখন সব মিলিয়ে কি পরিস্থিতি দাঁড়ায় একবার ভেবে দেখুন।

যাই হোক তাতেও তেমন সমস্যা নেই। হোমিওপ্যাথি আপনাকে নিরাশ করবে না। তবে ক্রনিক অবস্থায় আপনাকেও ধৈর্য ধরে চিকিৎসা নিতে হবে। আমার চিকিৎসা অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, ব্যথার মতো জটিল উপসর্গ হয়তো সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই কমে আসবে কিন্তু দীর্ঘদিনের তৈরী হওয়া রোগের তীব্রতা ভেতরে থেকে দূর হতে প্রায় দু’তিন বছর সময়ও লেগে যায় কিছু পেশেন্টের ক্ষেত্রে। আবার ১০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে প্রতিদিন মাত্র একবার ঔষধ প্রয়োগ করে একেবারে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরিয়ে আনা যায়। আর এটি ঘটে বয়স্ক রোগীদের ক্ষেত্রে।

পরিশেষে যে কথাটি বলবো, এই রকম বেদনাদায়ক জটিল ব্যাধিতে কেউ আক্রান্ত হোক এটা কারো কাম্য নয়। দুৰ্ভাগ্যবশতঃ যদি কেউ প্যানক্রিয়াটাইটিস এবং এই সক্রান্ত জটিল পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন তাহলে কাল বিলম্ব না করে একজন অভিজ্ঞ এবং রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের পরামর্শ নিন আশা করি সুফল পাবেন।

এই রোগের হোমিওপ্যাথি ছাড়া উন্নত কোন স্থায়ী ম্যানেজমেন্ট নেই আগেই বলেছি। তাই বাংলাদেশ ভারত কেন সুদূর ইউরুপ আমেরিকাতে গিয়ে এলোপ্যাথিক ডাক্তার দেখালেও কোন স্থায়ী সুফল পাবেন না, কথাটি মনে রাখবেন তাতে আপনার অর্থ ও সময় দুটিই বাঁচবে।
Scroll to Top
×

Hello!

Click one of our contacts below to chat on WhatsApp

×