আইবিএস Irritable bowel syndrome (IBS) এবং ওডিএস Obstructed Defecation Syndrome (ODS) সমস্যায় যারা আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাদের জীবন যে কি প্রকারের দুর্বিষহ হয়ে উঠে সেটা একমাত্র ভুক্তভুগীরাই বুঝতে পারেন। আইবিএস হলে যেভাবে মানব শরীরে বিভিন্ন প্রকার মনোদৈহিক উপসর্গ সৃষ্টি হয়ে থাকে ঠিক তেমনি ওডিএস এর ক্ষেত্রেও সেরূপ হয়ে থাকে। তার মানে এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা মানুষিক রোগী নন। ভাইটাল ফোর্সের দুর্বলতম অবস্থায় আইবিএস এবং ওডিএস ব্যক্তি ভেদে বিভিন্ন জটিল জটিল উপসর্গ সৃষ্টি করে থাকে। তবে ভয় পাবেন না। এই সমস্যাগুলিরও উন্নত হোমিওপ্যাথিক ম্যানেজমেন্ট রয়েছে।
পেটের অস্বস্থি, পেট ফাঁপা, পেটে ব্যথা, ঘন ঘন পাতলা মল, কোষ্টবদ্ধ অবস্থায় মলের বেগ না আসা, খাওয়ার পরই টয়লেটের বেগ হওয়া ইত্যাদির মতো উপসর্গ আইবিএস সমস্যায় আক্রান্তদের ক্ষেত্রে প্রায়ই দেখা যায় আবার মলাশয়ে মল এসে থাকলেও সেই মল বের হতে চায় না, পায়খানা মলদ্বারের কাছে এসে আটকে যাওয়া এবং সহজে বের না হওয়ায় আংগুল দিয়ে বের করার মতো কষ্টকর উপসর্গগুলি আমরা ওডিএস এর ক্ষেত্রে দেখে থাকি।
এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় স্থানিক ভাবে রোগের কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে কিন্তু এই প্রক্রিয়ায় ঔষধ প্রয়োগ করে সাময়িক উপশম করা গেলেও সমস্যার কার্যতঃ কোন সমাধানই হয় না। কারণ মানব দেহে স্থানিক লক্ষণ সৃষ্টি হওয়ার পেছনে কিছু প্রকৃত রোগ ট্রিগার করে থাকে যা হোমিওপ্যাথিক নিয়মে রেসিসিভ করার উন্নত ম্যানেজমেন্ট রয়েছে।
স্থানিক চিকিৎসা চিন্তা করলে কোন কোন ডাক্তার আপনাকে ODS এর ক্ষেত্রে অপারেশন করে এই বাধাঁ দূর করার পরামর্শ দিবে যদিও আজ পর্যন্ত অপারেশন করে এই সমস্যা স্থায়ীভাবে নিরাময়ের খুব একটা রেকর্ড নেই বরং জটিলতা আরো বহুগুন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, এই অপারেশন বাংলাদেশের মত দেশে ৯৯% ক্ষেত্রেই রোগীদের কাছ থেকে এক চান্সে বিরাট অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার একটি ধূর্ত প্রক্রিয়া ছাড়া আর কিছুই না।
বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখার অনুরোধ রইল। যেসব চিকিৎসকরা এই প্রকারের অপারেশন করেন তাদের ক্লিনিকে এবং যেসব রোগীরা ইতিপূর্বে সার্জারি করে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন তাদের সাথে কথা বললেই বিষয়টি সম্পর্কে যেকেউ পরিষ্কার ধারণা পাবেন।
বাংলাদেশে মায়েদের অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান ডেলিভারী করার মতো অবস্থা সৃষ্টি করে রেখেছে একশ্রেণীর মেডিক্যাল মাফিয়া। বিষয়টি সম্পর্কে ভাল ধারণা না থাকার ফলে ওডিএস ODS সমস্যার ক্ষেত্রেও একই কাজ করা হয়ে থাকে। যদিও ওডিএস সার্জারি করে ৯৯% রোগীরই কোন উপকার হওয়া তো দূরের কথা বরং জটিলতা আরো বৃদ্ধি পায়। বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখার অনুরোধ রইল।
যদিও সব চিকিৎকরা এই অমানুবিক কাজ করেন না। অনেক চিকিৎসকই ঔষধ প্রয়োগ করে এবং জীবনযাত্ৰার পরিবর্তন করে এই সমস্যা ঠিক করা চেষ্টা করে থাকেন, যদি তিনি এই সমস্যার সুচিকিৎসা জানেন। আইবিএস IBS এবং ওডিএস ODS সমস্যায় আপনি হোমিও চিকিৎসা নিয়েও উপকৃত হতে পারেন। তবে বিষয়টি এমন নয় যে কিছু হোমিওপ্যাথিক ঔষধ খেলেই আপনি ভালো হয়ে যাবেন।
শুরুতেই যদি কেউ অভিজ্ঞ একজন হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা নেন তাদের সুস্থ হতে বেগ পেতে হয়না। কিন্তু একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কাছে রোগীরা আসেন রোগের জটিল এবং কঠিন অবস্থায় তখন এই সমস্যাগুলি ঠিক হতে বেশ সময় লাগে। কিছু কিছু পেশেন্টের ক্ষেত্রে ঔষধের প্রতিক্রিয়া তৈরী হতেও দেরী লাগে। শুধু তাই নয়, এই রকম জটিল পরিস্থিতিতে কোন কোন পেশেন্টের ক্ষেত্রে ইম্প্রোভমেন্ট নিয়ে আসাও দুস্কর হয়ে দাঁড়ায়, অর্থাৎ সবাইকে ঠিক করা যায় না।
বিশেষ করে যারা সার্জারি করে প্রাকৃতিক অঙ্গে কাটা ছেড়া করে রোগের গতি প্রকৃতি জটিল থেকে জটিলতর করে হোমিও চিকিৎসা নিতে আসেন তাদের অবস্থা যে কি হয়ে থাকে সাধারণ মানুষ মাত্র যে কেউ চিন্তা করলেই বুঝতে পারার কথা। তবে হ্যা, ক্রনিক সমস্যায় হোমিওপ্যাথি যেহেতু স্থানিক চিকিৎসা না দিয়ে রোগীর সার্বিক অবস্থা চিন্তা করে চিকিৎসা দিয়ে থাকে তাই ধৈর্য্য ধরে চিকিৎসা নিলে কিছু পেশেন্ট রোগের ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকেও পরিত্রান পেয়ে যায়। কেইস হিস্ট্রি নিয়ে ঔষধ প্রয়োগ করলেই তা বুঝা যায়। মোট কথা, যে বিষয়টি দেখা গেছে, যারা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সম্পর্কে আগে থেকেই ভালো ধারণা রাখেন অথবা চিকিৎসকের কথা অনুযায়ী চলাফেরা করেন এবং ঔষধ প্রয়োগ করেন তারাই হোমিও চিকিৎসা নিয়ে বেশি উপর্কৃত হন।