আইবিএস হলে কি কি সমস্যা হয়? IBS এর মনোদৈহিক উপসর্গ

ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম আইবিএস যদি কোন কারণে কারো শরীরে জেগে উঠে তাহলে শারীরিক ও মানুষিক ভাবে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। কোন কোন IBS রোগী সরাসরি প্ৰশ্ন করে বসেন – স্যার আমি আইবিএস সমস্যায় আক্রন্ত আমি কি বিয়ে করতে পারবো? দীর্ঘদিনের অসুস্থতার কারণে মনোদৈহিক নানা দুর্বলতার মধ্যে কিছু কিছু IBS রোগীদের মধ্যে যৌন দুর্বলতাও প্রকট থাকে। তাই তাদের মধ্যে এই রকম প্রশ্ন আসা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু মনে রাখা উচিত, আইবিএস পেশেন্টদের বিয়ে করতে কোন বাধা নেই। প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় আইবিএস এর জটিল উপসর্গগুলি কমে আসলে তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে কোন সমস্যাই হয় না। এবার আসুন আইবিএস হলে ব্যক্তিভেদে কি কি সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে সেগুলি জেনে নিই-

পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়াযুক্ত আইবিএস সমস্যায় যেকোন সময় হঠাৎ করেই টয়লেটের বেগ আসতে পারে। আপনি তৈরী হয়ে কোথাও যাওয়ার জন্য বের হচ্ছেন ঠিক সেই মুহূর্তে পায়খানার বেগ চাপতে পারে। গাড়িতে করে কোথাও যাচ্ছেন যেকোন সময় পায়খানার বেগ চাপতে পারে আর সেই ভয়ে গাড়িতে চড়তে দারুন অসুবিধা হয়ে দাঁড়ায়।

কারো কারো অতি ভোরে টয়লেটের চাপে ঘুম পর্যন্ত ভেঙে যায় আর সেই মুহূর্তে টয়লেটে না যেয়ে কোন উপায়ও থাকে না। কিছু কিছু পেশেন্টের ক্ষেত্রে মানুষিক চাপ নিলে বা পরীক্ষার সময় এই উপসর্গগুলি প্রকট ভাবে দেখা দেয়। তাই নানা প্রকার অস্বস্তির পাশাপাশি এই বিব্রতকর লক্ষণ বা উপসর্গগুলি তাদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলে। কারো কারো ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা জেগে উঠে। কারো মল নরম কিন্তু পরিষ্কার হয় না। কিছু কিছু পেশেন্টকে আবার আঙ্গুল দিয়ে মল বের করতে হয়।

আইবিএস সমস্যায় রোগাক্রান্ত প্রায় প্রত্যেকেরই পেটে ব্যথা অথবা শ্বাসকষ্টের মতো জটিল কিছু উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকে। ব্যথার তীব্রতা ও স্থায়িত্ব ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতে পারে। কোন কারণে মানুষিক চাপ নিলে এবং নির্দিষ্ট কিছু খাবার গ্রহণ করলে সাধারণত এই উপসর্গগুলি বেড়ে যায় যা ভুক্তভূগীকে স্বাভাবিক জীবন যাত্রার ক্ষেত্রে দারুন অসুবিধায় ফেলে দিয়ে থাকে।

কিছু কিছু আইবিএস পেশেন্টদের পেট ফুলে থাকা বা ফেঁপে থাকার সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। কারো ক্ষেত্রে খাবার খাওয়ার পরই পেট ফেঁপে উঠে আবার কারো কারো এমনিতেই বিকালের দিকে পেটে গ্যাস জমে পেট ফুলে উঠে সাথে থাকে বিরক্তিকর অস্বস্তি।

আইবিএস সমস্যায় আক্রান্ত কিছু কিছু পেশেন্টদের পিঠে বা কোমরের দিকে ব্যথা হতে পারে যার কারণ কোন মেডিক্যাল টেস্ট করেই ধরা পড়ে না। পেট ফুলে থাকা বা ফেঁপে থাকার পাশাপাশি অতি দুর্বল কিছু আইবিএস আক্রান্তদের পিঠে বা কোমরের দিকে ব্যথা হতে পারে।

কোন কোন আইবিএস রোগী প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা প্রস্রাব ঠিক ঠাকভাবে পরিষ্কার না হওয়ার মতো সমস্যায় ভুগতে পারেন। মূত্রথলীতে অতিরিক্ত চাপ এবং পূর্ণতা থেকে প্রস্রাবের এই সমস্যা আসতে পারে। ঘন ঘন পাতলা পায়খানার উপসর্গ থেকেও অন্ত্রের অসংলগ্নতা দেখা দিতে পারে।

খুব কম রোগীদের ক্ষেত্রে আরো যে সমস্যাটি দেখা যায় সেটি হলো – দেহ থেকে দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস বের হওয়া। এটি ব্যক্তিকে প্রায়শই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়ে থাকে বিশেষ করে যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে ঐ ব্যক্তি অস্বস্তিতে পড়ে যান।

আইবিএস সমস্যা কারো শরীরে জেগে উঠলে যে শারীরিক এবং মানসিক উপসর্গগুলি সৃষ্টি হয়ে থাকে সেগুলি ব্যক্তিকে কর্মবিমূখ করে তূলতে পারে, যার ফলে কর্মক্ষেত্রে বা নিজ বাড়িতে নানা কাজ কর্মে উৎসাহের অভাব দেখা দিতে পারে। আইবিএস এর কারণে এমন হয় জেনে অনেকেই আশ্চর্য হতে পারে। তবে মনে রাখবেন, বহু ছাত্রছাত্রী তাদের পড়াশোনা বাদ দিতে বাধ্য হয়। বহু চাকরীজীবি তাদের চাকরি থেকে অকালেই অবসর নিতে বাধ্য হয়।

পরিশেষে যে কথাটি বলবো, এই রকম যন্ত্রণাদায়ক জটিল মনোদৈহিক সমস্যায় কেউ আক্রান্ত হোক এটা কারো কাম্য নয়। দুৰ্ভাগ্যবশতঃ কেউ যদি আইবিএস IBS এর মতো জটিল পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন তাহলে কাল বিলম্ব না করে একজন অভিজ্ঞ এবং রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের পরামর্শ নিন আশা করি সুফল পাবেন।

হোমিও চিকিৎসক আপনাকে চিকিৎসা দেয়ার সময় আপনার কনস্টিটিউশন অনুসারে ঔষধ বের করার জন্য আপনার হিস্ট্রি নিবেন সাথে আপনার শৈশবের জীবনদর্শন, আপনার পিতা-মাতা, দাদা-দাদি, নানা-নানীর হিস্ট্রি নিবেন। তখন অভিজ্ঞ একজন হোমিও চিকিৎসক বের করবেন আপনার ভেতরে প্রকৃত রোগের কি কি জেনেটিক মেটেরিয়াল আছে। তারপর ধাপে ধাপে নির্দিষ্ট মাত্রায় ঔষধ প্রয়োগ করে সেগুলিকে প্রকট অবস্থা থেকে সুপ্তাবস্থায় পাঠাবেন এবং আপনার ভাইটাল ফোর্সকে শক্তিশালী করে তুলবেন। তখন আপনার মধ্যে কোন রোগ জটিলতা থাকবে না এবং আপনি ভালো থাকবেন।

Scroll to Top
×

Hello!

Click one of our contacts below to chat on WhatsApp

×