প্যানক্রিয়াটাইটিস যে সকল জটিলতা সৃষ্টি করতে করে থাকে এর মধ্যে রয়েছে- সংক্রমণ, ডায়াবেটিস, Pancreatic Pseudocyst সিউডোসিস্টের গঠন, কিডনি বিকল হওয়া, শ্বাসকষ্ট, অগ্ন্যাশয় পাথর বা প্যানক্রিয়াটিক স্টোন, প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সার ইত্যাদি। এই জটিলতাগুলি সম্পর্কে আপনারা পূর্বের আলোচনা থেকে বিস্তারিত জেনেছেন। যেমনঃ তীব্র প্যানক্রিয়াটাইটিস অগ্ন্যাশয়কে সংক্রমণ প্রবণ করে তুলতে পারে, দীর্ঘস্থায়ী প্যানক্রিয়াটাইটিস অগ্ন্যাশয়ের ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলির ক্ষতি করে থাকে, যার ফলে ডায়াবেটিসের মতো সমস্যা জেগে উঠে।
তীব্র প্যানক্রিয়াটাইটিস এর ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয় ক্ষতিগ্রস্ত হলে উৎপন্ন তরল পদার্থ জমে জমে এই ধরনের সিস্ট তৈরি হয় যাকে সিউডোসিস্ট অর্থাৎ Pancreatic Pseudocyst বলা হয়ে থাকে যা পেটের ওপরের দিকে চাকার মতো অনুভূত হয়। আকারে ৬ সে.মি. এর চেয়ে ছোট হয় যা সাধারণত আপনা আপনি সেরে যায়। তবে যদি একটি বড় সিউডোসিস্ট ফেটে যায়, এটি সংক্রমণ এবং অভ্যন্তরীণ রক্তপাত ঘটাতে পারে।
Pancreatic pseudocysts are collections of leaked pancreatic fluids. They may form next to the pancreas during pancreatitis.
প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহজনিত কারণে এর সেলগুলো এর নিজস্ব এনজাইম দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অগ্ন্যাশয়ের গ্রন্থিযুক্ত অংশ থেকে প্রায় ২২ রকম এনজাইম নিঃসৃত হয়। স্বভাবিক অবস্থায় এই এনজাইমগুলো নিষ্ক্রিয় অবস্থায় অগ্ন্যাশয়ের কোষের মধ্যে থাকে এবং ক্ষুদ্রান্ত্রে না পৌঁছা পর্যন্ত সক্রিয় হয় না। এখন উপরোক্ত কারণগুলোর জন্য অগ্ন্যাশয়ের কোনো অংশ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হলে অথবা এর নালিগুলোতে চাপবৃদ্ধির ফলে সক্রিয় অগ্ন্যাশয় রস কোষে কোষে ছড়িয়ে পড়লে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়ে যায়।
- অগ্ন্যাশয়ের প্রোটিন জাতীয় পদার্থের ক্ষতি সাধন হয়
- রক্তনালিতে ক্ষত তৈরি হয়ে পরবর্তীতে রক্তপাত হয়
- চর্বি জাতীয় পদার্থ ধ্বংস হয়
- প্রদাহজনিত পরিবর্তন হয়
কোনটি বেশি হয় তা নির্ভর করে ক্ষতির ভয়াবহতা এবং কতক্ষণ ধরে তা ঘটেছে তার ওপর। শুধু অগ্ন্যাশয়ের চর্বি নয় এর আশপাশের উদর গহ্বরের চর্বিগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যদি এরপরও রোগী বেঁচে থাকে তবে পরবর্তীতে ধীরে ধীরে ক্ষয়ক্ষতি কমতে থাকে এবং এ ধরনের সিউডোসিস্ট অর্থাৎ Pancreatic Pseudocyst তৈরি হতে পারে। ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস এর ক্ষেত্রেই আমরা এরূপ দেখতে পাই। তাই এর সুচিকিৎসা প্রয়োজন।
ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস সারানোর হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্য কোন প্যাথিতে ভালো চিকিৎসা নেই। হোমিওপ্যাথিতে এই রোগের বেশ উন্নত ম্যানেজমেন্ট রয়েছে। অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের পরামর্শক্রমে প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিলে প্যানক্রিয়াটাইটিস ধীরে ধীরে ভালো হতে থাকে যার ফলে এই ধরণের সিস্ট আর তৈরী হতে পারে না আর যেগুলি আগে থেকেই তৈরি হয়ে থাকে সেগুলিও মিলিয়ে যেতে থাকে।
পরিশেষে যে কথাটি বলবো, এই রকম বেদনাদায়ক জটিল ব্যাধিতে কেউ আক্রান্ত হোক এটা কারো কাম্য নয়। দুৰ্ভাগ্যবশতঃ যদি কেউ প্যানক্রিয়াটাইটিস এবং এই সক্রান্ত জটিল পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন তাহলে কাল বিলম্ব না করে একজন অভিজ্ঞ এবং রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের পরামর্শ নিন আশা করি সুফল পাবেন।